বগুড়া শেরপুরে খাস সম্পত্তিতে বসবাসকারী পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টায় ঘরে তালাবদ্ধ করে অবরুদ্ধের ঘটনা সহ নানা হুমকি ধামকির অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার(২৪ জুলাই) বিকেলে শেরপুর পৌরশহরস্থ বসাকপাড়া এলাকায়। খাস জমিতে বসবাসের স্থায়ী বন্দোবস্ত সহ পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে। এমন ঘটনায় শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে বগুড়ার শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর শহরের বসাকপাড়া এলাকায় মৃত নিরঞ্জন মহন্তের ছেলে দিলীপ মোহন্ত তার লিখিত বক্তব্য বলেন, প্রায় ৭০ বছর যাবত শেরপুর পৌর মৌজার জেএল নং ১০৯ খতিয়ান ১/১ দাগ নং ৬৫৫, শ্রেণী-বাড়ী, প্রায় ৩.০০ শতাংশ জমির উপরে ঘরবাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে আমার পিতামহের কাল থেকে অদ্যবধি আমরা। দীর্ঘদিন ধরে খাস খতিয়ানভূক্ত জমিতে বসবাস করার ফলে আমরা পৌরকর নিয়মিত ও বিদ্যুৎ সংযোগপূর্বক বিল পরিশোধ করে আসছি। কিন্ত হঠাৎ করে একই এলাকার দেবাশিষ কিশোর মুন্সী, জয় কিশোর মুন্সী, সুবল কিশোর মুন্সী, ধ্রবজ্যেতি কিশোর মুন্সী সহ কয়েকজন বিগত সালের প্রথম দিকে সেই খাস খতিয়ান সম্পত্তিটি তাদের পৈত্বিক সম্পত্তি দাবী করে আমাদেরকে জায়গা ছেড়ে দিতে নানাভাবে চাপ ও হুমকী দেয়। এরপর ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর আর বিবাদীরা জায়গা উদ্ধার বা ছেড়ে দেয়ার জন্য আগ্রহ দেখায় না। এরপর চলতি বছরের গত ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই বিবাদীগণেরা উচ্ছেদ করার অপচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আমাদেরকে বাড়ীর গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময় আমি ও আমার স্ত্রী কাজলী মোহন্ত ঘরের মধ্যে আটকা পড়ে অবরুদ্ধ থাকি। এর প্রেক্ষিতে আমরা কয়েকঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর আমি সরকারি সেবা প্রাপ্তি জন্য ৯৯৯- এ ফোন করার প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ এসে আমাদের বাড়ীর তালা খুলে আমাদেরকে অবমুক্ত করেন। এর আগে গত ২১ জুলাই বিবাদীরা আমাদের বাড়ীঘর ছাড়ার জন্য নানা হুমকী ধামকী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এতে আমরা গরীব ও অসহায় মানুষ ওইসব প্রভাবশালীদের হুমকী-ধামকীতে জীবনের নিরাপতা হীনতায় ভূগছি।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ মহন্ত আরো বলেন, ওই সম্পত্তিটি যদি বিবাদীদের নামে যাবতীয় কাগজপত্র থাকতো তাহলে প্রায় ৭০ বছর ধরে আমার বাপ-দাদারা বসবাস করে আসা কালীন সময়ে অবদি কোনদিন তা উদ্ধার বা দখলে নেয়নি কেন। এতদিন পরে তাহলে কোন কাগজ পত্রের আলোকে আমাদেরকে উচ্ছেদের জন্য হুমকী-ধামকী দিয়ে আসছে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। অবশ্য লোকমুখে জানতে পেরেছি তারা নাকি একটা কাগজ তৈরী করেছে ভূমি অফিসের মাধ্যমে। আমাদের প্রশ্ন “সে কাগজপত্র যদি উপজেলা অফিস দিয়েই থাকে তাহলে ওই সম্পত্তি অবমুক্তকরণ কাগজ পত্রাদির আলোকে আমাদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করবেন উপজেলা প্রশাসন।” তবে বিবাদীদের উচ্ছেদের হুমকিতে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় মানবেতন জীবন যাপন করছি।
এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এসএম মইনুদ্দিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার একটি পরিবারের ঘরে তালা অবরুদ্ধ করার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে অবমুক্ত করেন। তবে এ ঘটনায় কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।