বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় এক নারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই সময়ে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একযোগে বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা শিক্ষা বিভাগ।
জানা গেছে, মালিকী জাহান নামের ওই শিক্ষিকা ২০১৯ সালে এনটিআরসিএ’র দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সোনাতলার সবুজ সাথী উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তার এনটিআরসিএ ইনডেক্স নম্বর ৫৬৮৫২৯৬৩।
তবে ওই ইনডেক্স গোপন রেখে তিনি ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সারিয়াকান্দি উপজেলার নওখিলা পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ে আরেকটি ইনডেক্স (৫৬৮২৬২২১) ব্যবহার করে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সেখানে কর্মরত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন।
সরকারি ওয়েবসাইট ইএমআইএস (Education Management Information System)-এর তথ্য অনুযায়ী, দুই বিদ্যালয়ের এমপিও শিট ঘেঁটে তার নামে বেতন উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মালিকী জাহান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি দুই প্রতিষ্ঠানে ভুলবশত বেতন তুলেছি। যা অতিরিক্ত উত্তোলন হয়েছে, তা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেব।’
সবুজ সাথী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাসিনা বেগম বলেন, ‘নওখিলা স্কুল থেকে উত্তোলিত বেতন ফেরত দিতে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে, নওখিলা পিএন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমান কুমার সাহা বলেন, ‘তিনি ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত আমাদের বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন এবং পরে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে যান।’
সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টির সত্যতা মিলেছে। বিস্তারিত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এই ঘটনায় এলাকায় শিক্ষকদের নৈতিকতা ও প্রশাসনিক তদারকি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সচেতন মহল এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।